ওজন কমানো উপায়

ওজন কমানো উপায়:আমরা বলে থাকি আমাদের ওজন এবং সুস্বাস্থ্যতা দুটোই একে অপরের সাথে খুব সুন্দর ভাবে জড়িত ।বর্তমানে সবাই কমবেশি স্বাস্থ্য সচেতন। যাদের ওজনটা একটু বেশি তারা নানারকম পরিশ্রম করেও ওজন কমাতে পারছেনা। এতে অনেকে ফাস্ট স্টেশনে পড়ে যায়। ওজন বাড়লে শুধু আপনি মোটাই হবেন না তার সাথে শরীরে নানা রকমের রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে দেয় তাই সঠিক ওজন থাকাটা খুব জরুরী। । তবে আপনাদের মাথায় এ কথাটা রাখতে হবে যে তাড়াহুড়া করে ওজন কমানো টা ঠিক হবে না। একটা কথা মনে রাখবেন একদিনে আপনার ওজন বৃদ্ধি পায়নি। ধৈর্য ধরুন ধীরে ধীরে আপনি সবকিছুর মধ্যে ব্যালেন্স করুন আপনার খাদ্য তালিকা থেকে শুরু করে আপনি কি করছেন কতটা হাঁটছেন কতটুক ব্যায়াম করছেন সেদিক ও খেয়াল রাখুন।  চলুন তাহলে  খুব সহজেই ওজন কমানোর  উপায় গুলি বিস্তারিত জেনে নিই।

পোস্ট সুচীপত্র

ওজন কমানোর কিছু সহজ এবং কার্যকরী উপায়

ওজন কমানো উপায়

শরীরের সঠিক ওজন থাকলে যেমন রোগ বিশুক কম হয় ও মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। তাই সুস্থ থাকার জন্য ওজন কমানো খুবই জরুরী।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

অতিরিক্ত ওজন রোগের ঝুঁকি বাড়ায় যেমন ডায়াবেটি স, হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপ। প্রতিদিন কিছুটা পরিমাণে হাঁটুন ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। সাঁতার কাটুন, সাইকেল চালান, আপনি লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনার প্রচুর ক্যালরি চলে যাচ্ছে। এটা আবার অনেকে ভাবতে থাকেন বেশি সিড়ি দিয়ে উঠানামা করলে আমার হাঁটুর অনেক ক্ষতি হবে এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। হাটুকে ভগবান তৈরি করেছে আপনার শরীরের ওজনকে বহন করার জন্য। তবে হাঁটুর ব্যথা থাকলে সিড়ি না ভাঙ্গায় ভালো।

কার্যকলাপ ক্যালোরি জ্বালানোর পরিমাণ (প্রতি 30 মিনিট) সাহায্যকারী উপকারিতা
হাঁটা 150 হৃদরের সুস্থতা
দৌড়ানো 300 শক্তি বৃদ্ধি
সাইক্লিং 250 পেশী শক্তি বাড়ানো
যোগব্যায়াম 200 মানসিক শান্তি

 

কি কি খাবার কি নিয়ম মেনে খেলে আপনার তাড়াতাড়ি ওজন কমবে ?

ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ

ফলমূল এবং শাক সবজির ওজন কমানোর ভূমিকা

ফল ও সবজি আমাদের শরীরের ওজন কমাতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলোতে ফাইবার ভিটামিন অধিক পরিমাণে থাকে। ফল এ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যায় শরীরে আর সবজি পেট ভরিয়ে রাখে বারবার খিদে পায় না।

ওজন কমানোর জন্য সঠিক পরিমাণে প্রোটিন খাওয়ার খাওয়া উচিত

কঠিন শরীরের পেশী গঠনের অপরিহার্য। মাছ মাংস ডাল ডিম প্রোটিনের ভালো উৎস। তাই সঠিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

পানীয় জল সাথে ওজন কমানোর কি সম্পর্ক?

সঠিক পরিমান জল খাওয়া শরীরের ওজন কমানোর একটি অপরিহার্য উপাদান। জল শরীরে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং মেয়েটাবলিজম বাড়ায়। প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার জল পান করা উচিত। খাবার খাওয়ার  তিরিশ মিনিট আগে যদি বেশি করে জল খেয়ে নেন তাহলে খিদে  কমে যায় আর অতিরিক্ত খাবারও খেতে হয় না।

সবুজ চা পান করুন

আপনি প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ সবুজ চা পান করার চেষ্টা করুন। সবুজ চায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ফ্যাট  কমাতে সাহায্য করে।

খাবার খাওয়ার সময়সূচি

স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই হবে না নিয়ম মেনে সময়সূচী বানিয়ে খাবার খেলে শরীরে ওজন কমাতে খুব তাড়াতাড়ি সাহায্য করবে। নিচে সুন্দরভাবে সাজিয়ে বলে দিয়েছি কোন সময় কি খাবার খেতে হবে।

নিয়মিত সময়ে খাবার খেলে বিপাকের গতি বৃদ্ধি পায়। একটি সাধারণ খাবারের সময়সূচি হতে পারে:

খাবারের সময় মানুষের খাদ্যাভাস
সকাল ৭-৮টা সকাল খাবার (দুধ, ওটস বা ফলমূল)
দুপুর ১২-১টা মধ্যাহ্ন ভোজ (ভাত, মাংস, সবজি)
বিকেল ৪-৫টা স্ন্যাকস (বাদাম, ফল)
রাত ৭-৮টা রাতের খাবার (সালাদ, তরকারি, ডাল)

 

আপনি খাবার খান পেটটাকে অল্প খালি রেখে। প্রতিদিন তিনবারের জায়গায় পাঁচবার খান কিন্তু পেট থেকে খালি রেখে খান।

সঠিক ঘুম আপনার ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে

সঠিক ঘুম না হলে আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। ঘুমের অভাবে দেহের বিপাকের কাজকে কমিয়ে দেয়। এটা ওজন বৃদ্ধি করার কারণ হয়ে দাঁড়ায়l

সুস্বাস্থ্যের জন্য সেরা ১০টি হেলথ টিপস

কি কি খাবেন না

চর্বি জাতীয় খাবার, ফাস্টফুড, কোলড্রিং,মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় জাতীয় কোন খাবার এটাকে বর্জন করতে হবে। এই ধরনের খাবার আপনার শরীরের ওজন খুব তাড়াতাড়ি বাড়িয়ে দেয়।

কি কি খাবার আপনাকে ত্যাগ করতে হবে

আপনার ওজন কমাতে হলে আপনাকে চর্বিযুক্ত খাবার একদম খাওয়া যাবেনা। মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় কোল্ড ড্রিংক এগুলো ত্যাগ করতে হবে l ফাস্টফুড খাবার খেলে চলবে না।

ওজন কমানোর কি কি সুবিধা আছে

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

ওজন কমালে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। শরীরে ওজন কমানোর ফলে ইনসুলিনের ক্ষমতা বাড়তে থাকে, ফলে রক্তের শতকরা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আপনাকে ওজন কমাতে হবে তার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ওজন কমলে রক্তনালিতে চাপ কমবে, রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে কাজ করে, ফলে উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা কমে যায়।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়

অতিরিক্ত ওজনের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কলেস্টরেল এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসের মতন সমস্যাগুলো সৃষ্টি করতে পারে যা হৃদরোগ রোগের ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আপনার ওজন কমলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায় ফলে হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকেl

হার ও হাড়ের জয়েন্ট সুরক্ষা

অতিরিক্ত ওজনের ফলে হাড় ও জয়েন্ট এর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। তার ফলে হাড়ের জয়েন্টের নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন কমলে এই চাপ কমে যায় হার ও জয়েন গুলো সুরক্ষিত থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি

আপনার ওজন কমলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে মানসিক চাপ কমে, শ্বাসকষ্ট কম হয়, শরীর হালকা হয় কাজ করার ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।

উপসংহার

ওজন কমাতে গেলে আপনাকে নিজেকে ভালোবাসতে হবে নিজের প্রতি সময় দিতে হবে। প্রত্যেকদিন অনেকগুলো নিয়ম মেনে চলতে হবে যা করতে গেলে আপনার অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন। ওজন কমানোর উপায় গুলি শুধুমাত্র শারীরিক পরিবর্তন নয় বরং মানসিক সুস্থতার জন্য খুব সাহায্যকারী। প্রতিদিন এই নিয়মগুলো মেনে চলুন আর আপনার লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যান।

F&Q


প্রশ্ন : ওজন কমানোর জন্য কি কি করা উচিত?

উত্তর: শুধু শরীর চর্চা করলেই হবে না সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে আপনি খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে পারেন। হালকা গরম জল পান করুন, ঘরোয়া ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান, খাবারের কিছুক্ষণ পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটুন, ছয় থেকে আট ঘন্টা ঘুমান। এইভাবে আপনি শরীরের ওজন কমাতে পারবেন।

 প্রশ্ন : মাসে সর্বোচ্চ কত কেজি ওজন কমানো সম্ভব?

মাসে ৩ কেজি ওজন কমানো পুষ্টিবিদদের মতে স্বাস্থ্যসম্মত। ৮ থেকে ১০ কেজি ওজন কমাতে হলে আপনার তিন মাস সময় লাগবে পারে।

প্রশ্ন : সকালে খালি পেটে কি কি খেলে ওজন কমে?

জিরে ভেজানো জল খেতে পারেন, মধু দারুচিনি জল ও খেতে পারেন, গ্রিন টি খেতে পারেন এইগুলি যদি আপনি খালি পেটে খান তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন : ওজন কমানোর জন্য কি কি ব্যায়াম করা দরকার?

দৌড়ানো এবং জগিং উভয়ে পেটের চর্বি কমাতে খুব তাড়াতাড়ি সাহায্য করে। আর জগিং হলো বায়বীয় ব্যায়াম।

প্রশ্ন : পানি পান করলে কি ওজন কমে?

সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে অন্তত এক গ্লাস জল পান করা খুব প্রয়োজন। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে যে খাওয়ার কুড়ি থেকে ত্রিশ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করলে আপনার খিদে অনেকটা কমে যায় তার ফলে আপনি কম খাবার খান তাতে আপনার ওজন কমাতে অনেকটা সাহায্য করে।

প্রশ্ন : ওজন কমানোর জন্য সকালে খালি পেটে কি খেতে হবে?

গ্রিন টি, জিরা ভেজানো  জল, মধু দারুচিনির জল, মৌরি ভেজানো জল এগুলো পান করলে সকালে খালি পেটে ওজন ওজন কমে।

পোস্ট ট্যাগ-

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়, ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়, ৩০ দিনে ওজন কমানোর উপায়, লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়, ১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়, ৩০ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়, 20 কেজি ওজন কমানোর উপায়, ৩ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়, প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়, লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়, ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায়,

Leave a Comment